অফবিট

Nidhivan Forest: আজও প্রতি রাতে এই মন্দিরে শ্রী কৃষ্ণ গোপিনীদের সঙ্গে লীলায় মাতেন! জানুন রহস্যে মোড়া এই মন্দিরের কথা

নিধিবনের পরতে পরতে রয়েছে অদ্ভুত এক একটি রহস্য।

Advertisements

Nidhivan Forest: প্রতিবছর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পালিত হয় কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী। ভাদ্র মাসের অষ্টমী তিথি এবং রোহিণী নক্ষত্রের সঙ্গে মিলিত হয়ে মধ্যরাতে কৃষ্ণের জন্মোৎসব উদযাপনের প্রথা প্রচলিত রয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। এই বছর দুই দিনব্যাপী পালিত হবে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী তিথি শুরু হচ্ছে ৬ই সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টে ৩৮ মিনিটে এবং অষ্টমিতির শেষ হবে পরদিন অর্থাৎ ৭ই সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টে ১৪ মিনিটে। জন্মাষ্টমীর পূজা রাতে করা হয় বলে অনেকেই ৬ সেপ্টেম্বর তারিখটিকে বেছে নিয়েছেন কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালনের জন্য। এই দিন শ্রীকৃষ্ণকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়। নতুন পোশাকে সুসজ্জিত হন শ্রীকৃষ্ণ। নিবেদন হয় তাঁর পছন্দের ক্ষীর, মাখন, মিছরি, মালপোয়া, তালের বড়া এছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভোগ। শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন উপলক্ষে সেজে ওঠে নবদ্বীপ, নদীয়া, মথুরা, বৃন্দাবন সহ দেশের বিভিন্ন স্থান। বিভিন্ন জায়গায় জন্মাষ্টমী পালিত হলেও এই জন্মাষ্টমীর বিশেষ মহিমা দেখা যায় মথুরা-বৃন্দাবনে। জন্মাষ্টমীর দিন মথুরা বৃন্দাবনে ঢল নামে হাজারো হাজারো পুণ্যার্থীর।

Mysterious Nidhivan Forest In vrindavan

Nidhivan Forest

Advertisements

এই বৃন্দাবনেই লুকিয়ে রয়েছে এক অজানা রহস্য। ভারতের বহু মন্দিরে এমন অনেক আধ্যাত্মিক রহস্য লুকিয়ে রয়েছে যা অনেকেরই অজানা। এর মধ্যে বৃন্দাবনের নিধিবন (Nidhivan) মন্দির অন্যতম। মহাভারত অনুসারে, এই নিধিবনেই (Nidhivan) কেটেছিল শ্রীকৃষ্ণের শৈশবকাল। এটি বাঁকে বিহারী মন্দির, মূরলীধর মন্দির এবং লীলাধর মন্দির নামেও পরিচিত। মনে করা হয় আজও শ্রীকৃষ্ণ এই বনে তাঁর গোপিনীদের সঙ্গে রাসলীলায় মাতেন। তবে এই লীলা দেখার অধিকার নেই। কেউ বেশি আগ্রহ দেখাতে গেলে তার পরিণতিও হয় নাকি ভয়ংকর। নিধিবন (Nidhivan) সম্পর্কিত এমন কিছু রহস্য রয়েছে যার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আজ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই নিধিবনের (Nidhivan) রহস্য আজও আকর্ষিত করে পর্যটকদের। অজানা রহস্যে ঘেরা এই নিধিবনের অন্যতম আকর্ষণ হলো মন্দিরের ভিতরে সুন্দর কারুকার্যে ভরা রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি।

Nidhivan Forest

Advertisements

নিধি কথাটির অর্থ হলো সম্পদ এবং চারপাশ জঙ্গলে ঘেরা বলে এই মন্দিরের নাম হয়েছে নিধিবন। এই নিধিবনের পরতে পরতে রয়েছে অদ্ভুত একেকটি রহস্য। নিধিবনে থাকা প্রতিটি গাছই অন্য যে কোনো গাছের গাছের থেকে আলাদা। এখানকার গাছের শাখাগুলি মাটির দিকে। পাতা এতই ঘন যে রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায় না। এচনকার প্রতিটি তুলসী গাছই জোড়ায় জোড়ায়। একক তুলসী চারা দেখতে পাওয়া যায় না৷ মনে করা হয়, রাতে রাধা-কৃষ্ণের লীলার সময় এই গাছগুলিই শ্রীকৃষ্ণের খেলার সঙ্গে গোপীনির রূপ ধারণ করে। সকাল হতেই তারা আবার গাছের রূপে ফিরে যায়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে মনে করা হয় শ্রীকৃষ্ণকে শ্রদ্ধা জানিয়েই গাছের শাখা-প্রশাখাগুলি নিচের দিকে মুখ করে থাকে।

Nidhivan Forest

আরও একটি আশ্চর্যের বিষয় হলো বৃন্দাবনের এই নিধিবনে সারাদিন পশুপাখির আনাগোনা থাকলেও সন্ধ্যার আগেই তারা বন ছেড়ে চলে যায়। এমনকি সকাল থেকে এই নিধিবনে পূজারী ও ভক্তদের ঢল নামলেও সন্ধ্যারতির পর বন্ধ করে দেওয়া হয় নিধিবনের দরজা। এমনকি রাত্রে সেই স্থানে মন্দিরের সেবক-পুরোহিতরাও প্রবেশ করতে পারেন না। সন্ধের পর এই নিধিবনে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ। প্রচলিত বিশ্বাস থেকে মনে করা হয়, স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ আজও এখানে রাইকিশোরী ও অন্য গোপীনিদের সঙ্গে লীলাখেলায় মেতে ওঠেন আর মন্দিরের চারপাশ ঘিরে থাকা এই গাছগুলিই গোপীনিতে পরিবর্তিত হয়ে সেই রাসলীলায় অংশ নেয়।

জন্মাষ্টমীতে রাশিচক্র মেনে করুন এই কাজগুলি, কৃষ্ণের আশীর্বাদে সব মনোবাঞ্ছা হবে পূর্ণ

Nidhivan Forest

তবে আজ পর্যন্ত এই লীলা চাক্ষুষ করেননি কেউ। কৌতুকের বশবর্তী হয়ে সন্ধ্যার পর কেউ কেউ এই বনে গেলেও পরের দিন তাদের মৃত, অর্ধমৃত, বিকলাঙ্গ বা পাগল অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা অনুযায়ী, সন্ধের পর এই বন্ধ মন্দির থেকে ভেসে আসে ঘুঙুরের শব্দ এমনকি শোনা যায় বাঁশির সুরও। রাধা-কৃষ্ণের সন্ধ্যারতির পর পুরোহিতরা যে শাড়ি, মিষ্টি, চুড়ি, পান রেখে যান সকালে সেই সবকিছুই ছড়ানো-ছিটোনো অবস্থায় পাওয়া যায়। মিষ্টি, পান কেউ খেয়েছে বলেও বোঝা যায়। অনেক ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক এই মন্দিরের রহস্য উদঘাটন করতে চেষ্টা করেছেন এবং এই মন্দিরে সত্যি কিছু অস্বাভাবিক রয়েছে বলে তারাও মেনে নিয়েছেন।

এরকম আরও প্রতিবেদন পড়তে ফলো করতে পারেন আমাদের  Google News পেজটি

Related Articles